শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের সাথে সাংবাদিকগণের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বাফার গুদাম থেকে সরাসরি সার কিনতে চায় কার্ডধারী খুচরা বিক্রেতারা মৌসুমী বন্যা ও বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত লালমনিরহাট জনপদ: ত্রাণ-পুনর্বাসন অপর্যাপ্ত আমাদের দুঃখের আর এক নাম তিস্তা! লালমনিরহাটে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি ৩০বছরে উদযাপন উপলক্ষে কেককাটা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে বিলুপ্তির পথে শিল্পী বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা চলে গেলেন লালমনিরহাটের লোকসংগীত শিল্পী গোপাল দোয়ারী! ভারত-বাংলাদেশের চিকেন নেক ফেনিকে টার্গেটে ব্যর্থ হয়ে পাহাড়িদের মদত দিচ্ছে! লালমনিরহাটের সাবেক মেম্বার জয়নাল আবেদীন-এঁর ইন্তেকাল হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ!
লালমনিরহাটের নদীগুলোর চরের মানুষের নানান সমস্যা!

লালমনিরহাটের নদীগুলোর চরের মানুষের নানান সমস্যা!

লালমনিরহাটের তিস্তা, ধরলা, রত্নাই, স্বর্ণামতি, সানিয়াজান, সাকোয়া, চাতলা, মালদহ, ত্রিমোহীনি, মরাসতি, গিরিধারী, গিদারী, ধোলাই, শিংগীমারী, ছিনাকাটা, ধলাই ও ভেটেশ্বর নদীর পাড়ের অসহায় মানুষগুলো বারবার নদী ভাঙনের কবলে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে অবশেষে ঠাঁই নেয় বাঁধ কিংবা বিভিন্ন সড়কের ধারে। কেউ কেউ চলে যায় আশ্রয়ের জন্য নতুন ঠিকানার সন্ধানে। অনেকেই আবার জেগে ওঠা কোন চরে কোন মতে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নেয়। এভাবে সংগ্রাম করে টিকে থাকা এই মানুষগুলো জানালেন তাদের সমস্যা সংকট ও নিরসনের কথা।

 

ভুক্তভোগীরা বলেন, ৫ম শ্রেণী পাস করার পর আর পড়াশোনা করার সুযোগ পায় না ওই চরের শিশুরা। হাইস্কুল, মাদ্রাসা না থাকায় প্রাথমিকের দরজা পার হওয়ার পর ইচ্ছা থাকলেও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের সন্তানরা। তাই তারা উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান।

 

ওই সব চরের মানুষ কৃষিনির্ভর জীবনযাপন করলেও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বা কৃষির সাথে সম্পৃক্ত কেউ কোনদিন ওই চরের খোঁজ নেন না। তাই নিজেদের মতো করে কৃষি চাষাবাদ করছেন এতে করে ফলন ভালো হচ্ছে না বলেও অভিযোগ তোলেন। নিয়মিত তাদের এলাকার কৃষি সমস্যা সমাধানের জন্য উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের দাবি জানায়।

 

চরে বসবাসকারী বাসিন্দারা বলেন, শিক্ষার বাধার কারণে তাদের পরিবারর লোকজন শিশুদের বাল্যবিবাহ, যৌতুক, নারী নির্যাতনসহ নানা সমস্যায় পড়ে থাকেন।

 

তারা বলেন, এসব চরাঞ্চলে মাতব্বরদের কথার উপরে কেহ কথা বলার সাহস পায়না মাতব্বরদের বিচারে বিপক্ষে কেউ মুখ খুললে তাকেও শাস্তি পেতে হয়। বিনোদন বলতে স্থানীয় যুবকদের নাটক করা, আবার অনেকেই যাত্রা নিয়ে আসে সেখানে আবার চলে ছয়গুলি জুয়া। জুয়া খেলা চললে অনেকেই টাকা হেরে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। পরিবারিক দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়। এসব চরে বিদ্যুৎ নেই, ফলে তারা টিভি দেখতে পারে না। দেশের খবর শুনতে পারেনা। বর্তমানে মোবাইল ফোনের মেমরিতে গান তুলে বা ভিডিও অনুষ্ঠান তুলে পরিবারের লোকজন নিয়ে টিভির পরিবর্তে তারা দেখে। তারপরেও ব্যাটারি চার্জ সমস্যা। দু’চারটে বাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ রয়েছে। তাই তারা সরকারি বা বেসরকারিভাবে সবার বাড়িতে সৌর বিদ্যুতের দাবি করেন।

 

নৌকা নির্ভর যাতায়াত ব্যবস্থায় গর্ভবতী মা ও শিশুরা জরুরি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি জটিল রোগীদের চৌকিতে শুয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে লম্বা বাঁশের দু’পাশের চারজন কাঁধে নিয়ে জরুরি রোগী আনা নেয়ার কাজ করে। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেই তারা হাসপাতালে যাবার পূর্বেই অনেক স্বজন হারান। প্রতিমাসে সেখানে একটি মেডিকেল টিম পাঠানোর অনুরোধ জানান এলাকাবাসী।

 

পরিবার পরিকল্পনার মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা ওই চরের সাথে যোগাযোগ না রাখার জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারে না ওইচরের নারী-পুরুষ। ফলে প্রায় প্রতিটি পরিবারে ৬-১০জনের অধিক সদস্য দাঁড়িয়েছে।

 

আরও জানা যায়, চরের বাসিন্দারা খরার সময় যেমন রোগী নিয়ে যাতায়াতের সমস্যায় পড়েন তেমনি বর্ষাকালে বন্যার সময় খেটে খাওয়া মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। ফলে তাদের অভাব লেগেই থাকে। এছাড়াও চরাঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্যবো ক্যাম্প ও অপারেশনের ব্যবস্থা থাকলে চরের দরিদ্র মানুষেরা অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগতভাবে অনেক উপকৃত হবে। গুরুত্বর অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে স্পিডবোট, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য চরে আবাসিক ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান সংশ্লিষ্ট চরবাসী মানুষ।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone